ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে অস্ত্র পরীক্ষা ও প্রচার করেছে চীন, এমন তথ্য উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিদলীয় কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদনে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত মে মাসের চারদিনের সংঘাত চলাকালীন চীনের আধুনিক অস্ত্র ব্যবস্থা—এইচকিউ-৯ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, পিএল-১৫ আকাশ-থেকে-আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র এবং জে-১০ যুদ্ধবিমান—প্রথমবারের মতো সক্রিয় যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়। কমিশন এটি ‘বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রের পরীক্ষা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
সংঘাতের কয়েক সপ্তাহ পর, চীন পাকিস্তানকে ৪০টি জে-৩৫ পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান, কেজে-৫০০ বিমান এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রির প্রস্তাব দেয়। এছাড়া সংঘাতের পর চীনা দূতাবাসগুলো তাদের অস্ত্র ব্যবস্থার ‘সাফল্য’ আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচার করে বিক্রি বাড়ানোর চেষ্টা করে।
তবে কমিশন বলেছে, সংঘাতটিকে যদি ‘প্রক্সি ওয়ার’ বলা হয়, এতে চীনের ভূমিকা অতিরঞ্জিতভাবে দেখানো হবে। রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, চীন ফরাসি রাফাল যুদ্ধবিমানকে বদনাম করতে একটি বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালায়। ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থার বরাতে বলা হয়েছে, চীন ভুয়া সামাজিকমাধ্যম অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে রাফালের ধ্বংসাবশেষ প্রচার করেছে এবং এমনকি ইন্দোনেশিয়াকে রাফাল ক্রয় বন্ধে রাজি করিয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য রিপোর্টটিকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, “কমিশন সবসময় চীনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট, তাদের কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। রিপোর্ট বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে তৈরি।”
পেছনের ঘটনাবলি: ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হলে উত্তেজনা বাড়ে। ভারত হামলার সঙ্গে পাকিস্তানি জঙ্গি গোষ্ঠীর সংযোগ পায় এবং ৭ মে ‘অপারেশন সিদূর’ শুরু করে। পাকিস্তান পাল্টা মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালায়, যা ভারত প্রতিহত করে। পরে পাকিস্তানের একাধিক বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে পাল্টা আঘাত হানে ভারত। ১০ মে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে সংঘাত শেষ হয়।
