যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রভাব এখনো দেশটির সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও শিক্ষাগত জীবনে গভীরভাবে আঘাত হানছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের নানা প্রান্তে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাগত বয়কট অব্যাহত রয়েছে, যা তেল আবিবের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ–এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “সংস্কৃতি ও শিক্ষার ক্ষেত্রে গাজায় গণহত্যার প্রভাব ইসরায়েলের ওপর এখনও জারি রয়েছে। যুদ্ধ থামলেও এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কিছুটা স্বাভাবিক হলেও এই নেতিবাচক প্রভাব পুরোপুরি কাটেনি।”

প্রতিবেদন অনুযায়ী, একাধিক ইউরোপীয় দেশ ইউরোভিশন গান প্রতিযোগিতা থেকে ইসরায়েলকে বয়কট করেছে। এতে ইসরায়েলের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বড় ধাক্কা লেগেছে। হারেৎজ আরও জানিয়েছে, দেশের ভেতরেও বিভাজন স্পষ্ট—অনেকে মনে করছেন যুদ্ধ শেষ, কিন্তু বাস্তবে গাজা এখনো আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রে।

ইসরায়েলের মানবিক ক্ষয়ক্ষতি, চলমান সংকট এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলার অভিযোগের জেরে আইরিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন ইউরোভিশন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি, এক হাজারেরও বেশি লেখক ও সাহিত্যিক ইসরায়েলি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন।

প্রতিবেদন বলছে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েলি সঙ্গীত নিষিদ্ধ এবং চলচ্চিত্র বয়কট আন্দোলন ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। অভিনেতা ও চলচ্চিত্র নির্মাতারাও এই বয়কটে যুক্ত হচ্ছেন। এর প্রভাব পড়ছে শিক্ষাঙ্গনেও—ইসরায়েলের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইউরোপীয় সম্মেলন ও গবেষণা প্রকাশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হারেৎজ সতর্ক করে বলেছে, সাংস্কৃতিক ও একাডেমিক মহলে ইসরায়েলের ভাবমূর্তি এখনো নেতিবাচকই রয়ে গেছে।

যুদ্ধবিরোধিতা এখন আর শুধু গাজায় সীমাবদ্ধ নয়; এটি ধীরে ধীরে দখলদারিত্বের বিরোধিতায় রূপ নিচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নরম শক্তির ক্ষয়, বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়া এবং ইসরায়েলি বিজ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবীদের দেশত্যাগের আশঙ্কাই সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

 

news