ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ থামছেই না। আল জাজিরা জানিয়েছে, গত এক বছরে পশ্চিম তীরে অন্তত ১,৫০০টি ফিলিস্তিনি বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই অভিযানের ধারাবাহিকতায় এবার নূর শামস শরণার্থীশিবিরে আরও ২৫টি আবাসিক ভবন ভাঙার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তুলকারেম গভর্নরেটের নূর শামস শিবিরে চলতি সপ্তাহেই পরিকল্পিতভাবে এই ধ্বংস অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। গভর্নর আবদুল্লাহ কামিল বলেন, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সংস্থা তাকে আসন্ন ধ্বংসযজ্ঞের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে।

নূর শামসের পাশের তুলকারেম শিবির কমিটির প্রধান ফয়সাল সালামা জানান, এই অভিযানের ফলে প্রায় ১০০টি পরিবার সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাঁর ভাষায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে উত্তর-পশ্চিম তীরের শরণার্থীশিবিরগুলোতে সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযানের অজুহাতে ইসরায়েল ‘অপারেশন আয়রন ওয়াল’ শুরু করে। সেই অভিযানের চাপ এখন গিয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষের ওপর।

রামাল্লা থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক নূর ওদেহ জানান, এই ধ্বংস অভিযান আসলে একটি বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ। গত এক বছরে এর জেরে অন্তত ৩২ হাজার ফিলিস্তিনি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

মানবাধিকার সংস্থা ও ফিলিস্তিনি নেতারা বলছেন, এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে পশ্চিম তীরের মানচিত্র বদলে ফেলার চেষ্টা চলছে। ফিলিস্তিনি জাতীয় কাউন্সিলের প্রধান রুহি ফাত্তুহ এই অভিযানে ‘জাতিগত নির্মূল এবং ধারাবাহিক জোরপূর্বক স্থানচ্যুতি’-এর প্রতিফলন দেখছেন।

ব্রাউন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ওমের বারতোভ বলেন, দখলকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীকে পরিকল্পিতভাবে ‘মানবেতর’ করে তোলা হচ্ছে। এর ফল সমাজগতভাবে এক ধরনের ‘সামাজিক মৃত্যু’। ধ্বংসের মুখে থাকা পরিবারগুলো প্রতিদিন কাটাচ্ছে চরম অনিশ্চয়তা ও আতঙ্কে।

শিবিরের বাসিন্দা সিহাম হামায়েদ বলেন, “আমার ভাইদের সব বাড়ি ভেঙে ফেলা হবে। আমরা আগেই ঘরছাড়া হয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছি।”

news