অধিকৃত গাজা উপত্যকায় মুষলধারে বৃষ্টির কারণে হাজার হাজার তাঁবু আর অস্থায়ী আশ্রয়স্থল ডুবে গেছে, ভবন ধসে পড়েছে। কিন্তু অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, এই ধ্বংসলীলা সম্পূর্ণ প্রতিরোধ করা যেত, যদি ইসরায়েল গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো মেরামত আর মানবিক সরবরাহ প্রবেশে চলমান বাধা না দিত।

যুদ্ধবিরতির দুই মাস পার হয়ে গেলেও আন্তর্জাতিক বিচার আদালত আর জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ইসরায়েলকে গাজার মানুষের প্রতি আইনি দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে আসছে। তবু ইসরায়েল শুধু সীমিত সরবরাহ পাঠাচ্ছে—যেখানে সবকিছুরই চরম অভাব, মানুষ চরম বঞ্চনায় বাস করছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই অবস্থাকে গণহত্যার সম্ভাব্য প্রাক-পরিস্থিতি বলে মনে করছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র ডিরেক্টর এরিকা গুয়েভারা রোসাস বলেন: “দেয়ালে লেখা ছিল; এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়। এটা পুরোপুরি প্রতিরোধযোগ্য ট্র্যাজেডি। বন্যায় ডুবে যাওয়া তাঁবু আর ধসে পড়া ভবনের দৃশ্যকে শুধু ‘খারাপ আবহাওয়া’র দোষ দেওয়া যায় না। এগুলো ইসরায়েলের চলমান গণহত্যা আর বাস্তুচ্যুতদের জন্য মানবিক উপকরণ প্রবেশে ইচ্ছাকৃত বাধা দেওয়ার ফল।”
সাম্প্রতিক ঝড় ইতিমধ্যে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। দুই বছরের অবিরাম বোমাবর্ষণ আর জোর করে বাস্তুচ্যুতির কারণে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক। অ্যামনেস্টি বলছে, ইসরায়েল যদি জীবন রক্ষাকারী অবকাঠামো আর মানবিক সরবরাহের অবাধ প্রবেশ নিশ্চিত করত, তাহলে এই বিপর্যয় অনেকাংশে এড়ানো যেত।

গাজার বর্তমান অবস্থা চরম:

একাধিকবার স্থানচ্যুতি আর ৮১% কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত।

মোট এলাকার ৫৮% নিষিদ্ধ জোন ঘোষণা।

বেশিরভাগ ফিলিস্তিনি জীর্ণ তাঁবু বা ক্ষতিগ্রস্ত আশ্রয়ে থাকছে।

উপচে পড়া পয়ঃনিষ্কাশন, বন্যার পানি, ঠান্ডা আর প্রচণ্ড বাতাসের মাঝে পর্যাপ্ত চিকিৎসা বা শীতের উপকরণ নেই।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গাজায় গণহত্যা আর মানবিক বিপর্যয় রোধে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এবং ইসরায়েলকে অবরোধ তুলে মানবিক সহায়তা অবাধে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে বলেছে।

 

news