ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজায় চলমান ভয়াবহ সহিংসতা ও মানবিক সংকটের মধ্যেই একটি যুগান্তকারী ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বুধবার সন্ধ্যায় মিসরের সাথে প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রকাণ্ড প্রাকৃতিক গ্যাস চুক্তি অনুমোদনের ঘোষণা দিয়েছেন।

নেতানিয়াহুর দাবি, এই চুক্তির মোট মূল্য ১১২ বিলিয়ন শেকেল, যা প্রায় ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান। তার ভাষায়, এটি ইসরায়েলের ইতিহাসে এ পর্যন্ত স্বাক্ষরিত সবচেয়ে বড় গ্যাস চুক্তি, যার অর্থনৈতিক ও কৌশলগত গুরুত্ব অপরিসীম।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওথ আহরোনোথের প্রতিবেদন অনুসারে, জ্বালানি মন্ত্রী এলি কোহেনের সঙ্গে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক যৌথ ঘোষণায় নেতানিয়াহু এসব কথা বলেন। তিনি জানান, এই চুক্তি ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা স্বার্থ নিশ্চিত করার পরই আমেরিকান কোম্পানি শেভরনের সাথে চূড়ান্ত করা হয়েছে। চুক্তির অন্যতম প্রধান শর্ত অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে ইসরায়েলের নাগরিকদের কাছে তুলনামূলক কম দামে গ্যাস বিক্রি করতে হবে।

তবে চুক্তির অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য বা এর কারিগরি দিক নেতানিয়াহু প্রকাশ করেননি। অন্যদিকে মিসরীয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকেও এখনো এই চুক্তি নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বা বিস্তারিত বিবৃতি আসেনি। এই নীরবতা নিয়ে পর্যবেক্ষকদের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইসরায়েল হায়োম একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, মিসরের সাথে বড় ধরনের গ্যাস চুক্তি নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত অনুমোদন ছাড়া এগিয়ে নেওয়া যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।

সেই সময় তেল আবিব অভিযোগ করেছিল যে, সিনাই উপদ্বীপ এলাকায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে কায়রো দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। মিসর কর্তৃপক্ষ সেই অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করলেও, নেতানিয়াহু সম্ভবত সেই উত্তেজনার জেরেই চুক্তির বিষয়ে সতর্কতা জারি রেখেছিলেন। বর্তমান চুক্তিটি সেই জটিল পটভূমিকেই অতিক্রম করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই বিশাল বাণিজ্যিক চুক্তি ঘোষণার সময় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছেন—এই বাস্তবতা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের কাছে চুক্তিটিকে একটি বড় বৈপরীত্য হিসেবে মনে হচ্ছে।

 

news