আফগানিস্তানে শিয়া মুসলমানদের ওপর অব্যাহত সন্ত্রাসী হামলার রহস্য

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে শিয়া মুসলমান অধ্যুষিত অঞ্চলের এক কোচিং সেন্টারে এক আত্মঘাতী সন্ত্রাসীর বোমা হামলায় অন্তত ৩২ জন শহীদ ও ৪০ জন আহত হয়েছেন।

হতাহতদের বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং তারা হাজারা গোত্রের শিয়া মুসলমান। 

হাজারাসহ আফগানিস্তানের শিয়া মুসলমানরা প্রায়ই দায়েশ বা আইএস নামক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলার শিকার হচ্ছেন। আফগানিস্তানের তালেবান গোষ্ঠী ক্ষমতাসীন হওয়ার পর এ ধরণের হামলা বেড়েই চলেছে যদিও এই গোষ্ঠী শিয়া মুসলমানদের নিরাপত্তা দেবে বলে বার বার জোরালো প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে।

সন্ত্রাস দমনের ব্যাপারে তালেবানদের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও আফগানিস্তানের নানা অঞ্চলে গোত্রীয় ও ধর্মীয় কর্তৃত্বকামী সন্ত্রাসী হামলা ক্রমেই বাড়ছে। এর এক বড় কারণ হচ্ছে তালেবানদের হাতে আফগানিস্তানের সর্বময় ক্ষমতার একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ। দায়েশ বা আইএস এক্ষেত্রে তালেবানদের অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। আসলে আফগানিস্তানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সব দল ও গোত্রের প্রতিনিধিত্ব-ভিত্তিক একটি জাতীয় সরকার গঠন অপরিহার্য।  

আফগানিস্তানে সক্রিয় কোনো কোনো দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও নিজ নিজ দেশের অবৈধ স্বার্থ হাসিল ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য নানা ধরনের সংঘাত সৃষ্টি করছে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন।

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও সন্ত্রাস-বান্ধব শিক্ষা ব্যবস্থাও আফগানিস্তানে সন্ত্রাস বিস্তারের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। মূলত পাকিস্তানের এক শ্রেণীর মাদ্রাসা-শিক্ষক ধর্মের নামে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর সন্ত্রাসী হামলার উস্কানি দিয়ে দেশটির অনেক তরুণ ও যুবক শিক্ষার্থীদের আত্মঘাতী সন্ত্রাসীতে পরিণত করছেন। ধর্মের এ জাতীয় রাজনৈতিক অপব্যবহারের ফলে দলীয় ও গোত্রীয় কোন্দলের শিকার আফগানিস্তানে ভয়াবহ ধর্মীয় সংঘাতও ছড়িয়ে পড়তে পারে। 

এদিকে আফগানিস্তানের নুরিস্তান প্রদেশের দুটি জেলার নিয়ন্ত্রণ সম্প্রতি তালেবানদের হাত থেকে স্থানীয় জনগণের হাতে চলে গেছে বলে খবর এসেছে। আর এ থেকে সঠিক শাসন-ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় তালেবানদের ব্যর্থতা এবং তাদের স্বেচ্ছাচারী হত্যাযজ্ঞ ও তাদের প্রতি জনগণের অসন্তোষই ফুটে উঠেছে।
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news