ইসরাইলির সঙ্গে খেলতে অস্বীকৃতি জানায় যে খেলোয়াড় সে হলো প্রকৃত বিজয়ী: সর্বোচ্চ নেতা

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী মানুষের শারিরীক ও মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য খেলা ও ব্যায়ামের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, ক্রীড়াকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করারও অত্যন্ত গুরুত্ব রয়েছে। কারণ এর ফলে অন্য সব মানুষও খেলাধুলায় উৎসাহ পায় এবং দেশ ও জাতির জন্য সম্মান ও মর্যাদা বয়ে আনে। ক্রীড়াঙ্গনে বিজয় গোটা জাতিকে আনন্দিত ও গর্বিত করে। এ কারণে আমি সব সময় ক্রীড়াঙ্গনের বীরদের নিয়ে গর্ব করি এবং তাদেরকে অভিনন্দন জানাই।

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের রাজধানী তেহরানে আজ (সোমবার) শহীদ ক্রীড়াবিদ সংক্রান্ত দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলনে সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর যে বক্তব্য পড়ে শোনানো হয়েছে তাতে এ মন্তব্য এসেছে।

গত ১১ সেপ্টেম্বর বেশ কয়েক জন শহীদ জননী এবং এ সংক্রান্ত সম্মেলন আয়োজনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে সর্বোচ্চ নেতা যে বক্তব্য দিয়েছিলেন আজ তা সবার সামনে পড়ে শোনানো হয়।

শহীদেরা জীবিত কুরআনের এই বাণী উল্লেখ করে তিনি বলেছেন- শহীদেরা সমাজকে এই সুসংবাদ ও উৎসাহ দেয় যে, আল্লাহর পথে সংগ্রামের ক্ষেত্রে অনেক কঠিন বিষয় থাকলেও এর ফলাফল অত্যন্ত ভালো এবং এর সমাপ্তিটা ভয়ংকর ও দুঃখের নয়। তিনি এই আশাব্যঞ্জক সংবাদকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বলে উল্লেখ করে বলেন, ইসলামি বিপ্লবের ফলে মানুষের মধ্যে আল্লাহর পথে সংগ্রাম ও শাহাদাতের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয়েছে এবং ইরানে পাঁচ হাজারের বেশি ক্রীড়াবিদের শাহাদাত এর প্রতি ব্যাপক ও কার্যকর আকর্ষণের চমৎকার দৃষ্টান্ত।

তিনি ক্রীড়াঙ্গনের প্রতিযোগিতায় টেকনিক্যাল বিজয়ের সঙ্গে নৈতিক ও মূল্যবোধের বিজয়কে যুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে বলেন, আমাদের ক্রীড়াবিদরা যখন দখলদার ইসরাইলের খেলোয়াড়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ না নেওয়ার কারণে মেডেল হাতছাড়া করেন তখন এটা একটা বিজয়। কারণ ইসরাইলি খেলোয়াড়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া মানে হলো দখলদার, ঘাতক ও শিশু হত্যাকারী ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেওয়া। টেকনিক্যাল ও বাহ্যিক বিজয়ের অজুহাতে নৈতিক বিজয়কে বিসর্জন দেওয়ার কোনো মূল্য নেই। 


ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে রাজনীতিকে জড়ানো হয় না বলে  সাম্রাজ্যবাদী ও তাদের অনুসারীরা যে দাবি করত ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ক্রীড়া ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনায় তা গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে।

আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী ক্রীড়াবিদদেরকে নিজেদের ব্যক্তিগত, জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় সম্মান-মর্যাদা রক্ষা এবং প্রতিযোগিতার ময়দান ও এর বাইরে আচার-আচরণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, অতীতে আমাদের ক্রীড়াঙ্গন সব সময় আল্লাহ ও পবিত্র ইমামগণের নাম এবং ধর্মীয় ও নৈতিক দিকগুলোর মাধ্যমে সজ্জিত ছিল। কিন্তু পাশ্চাত্য নতুন নতুন খেলার মাধ্যমে নিজেদের সংস্কৃতিকেও এই অঙ্গনে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করেছে। আমাদেরকে এখন নতুন খেলার ক্ষেত্রে উন্নতি সাধন করে নিজেদের সংস্কৃতিকে প্রভাবশালী করতে হবে। খেলাধুলা পশ্চিমা সংস্কৃতি প্রবেশের সেতুতে পরিণত হোক তা হতে দেওয়া যাবে না।  


পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধের সময় ইলাম প্রদেশের একটি ফুটবল মাঠে বোমা হামলায় একদল ফুটবলার ও দর্শকের শাহাদাতের ঘটনাকে উপজীব্য করে 'মুস্তাতিলে কেরমেজ' নামের যে সিনেমা নির্মাণ করা হয়েছে তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেন সর্বোচ্চ নেতা। তিনি এই সিনেমার নির্মাতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শিল্প কর্মে সত্য ইতিহাস তুলে ধরা জরুরি এবং এই প্রক্রিয়া দৃঢ়ভাবে অব্যাহত রাখতে হবে। 
 খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news