সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ শুরু করেছেন নয়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সুনাক

 ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঋষি সুনাককে আনুষ্ঠানিক নিয়োগ দিয়েছেন ব্রিটেনের রাজা রাজা তৃতীয় চার্লস। সুনাক প্রধানমন্ত্রীত্বের দায়িত্ব নিয়ে প্রথমেই নতুন সরকারের সদস্যদের তালিকা ঘোষণা করেছেন।

সেইসঙ্গে তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে দেওয়া এক বক্তৃতায় দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। ঋষি সুনাক যুক্তরাজ্যের ৫৭তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লিজ ট্রাসের স্থলাভিষিক্ত হলেন। তিনি এশিয়ান বংশোদ্ভূত প্রথম অ-শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। ব্রিটেনের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী এবং সবচেয়ে ধনী প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। সুনাক দুই মাস আগে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচনের দৌড়ে লিজ ট্রাসের কাছে হেরে গিয়েছিলেন। এখন কনজারভেটিভ পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধিদের সমর্থনে এবং তার অপর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং হাউস অব কমন্সের স্পিকার পেনি মরডান্ট প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণে সুনাক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্ষমতাসীন দলের নেতা হয়ে যান। যুক্তরাজ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতাই প্রধানমন্ত্রী হন। তাই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর মসনদে আসীন হন সুনাক। সুনাক দায়িত্ব বুঝে নিয়েই ক্যাবিনেট গঠন করেন। এরইমধ্যে তিনি জেমস ক্লেভারলিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বেন ওয়ালেসকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং জেরেমি হান্টকে নয়া ক্যাবিনেটের অর্থমন্ত্রী হিসেবে বহাল রাখেন। গ্রেট ব্রিটেনের নয়া প্রধানমন্ত্রী ডমিনিক রাবকে ডেপুটি প্রধানমন্ত্রীর পদে ফিরিয়ে আনেন। সুনাক এমন এক জটিল সময়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীত্ব গ্রহণ করেন যখন ব্রিটেনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি গত অর্ধ শতাব্দীতে সবচেয়ে গুরুতর সংকটের মুখোমুখি।

 ব্রেক্সিট এবং কোভিড-১৯ মহামারীর অর্থনৈতিক দুরবস্থা কাটিয়ে না উঠতেই ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বে যে জ্বালানি ও খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি করেছে সেরকম একটি পরিস্থিতিতে ব্রিটেন গুরুতর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি রয়েছে। সুনাক তাই দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারকে তার কর্মপরিকল্পনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি অবিলম্বে অর্থ-বাজার এবং করনীতি স্থিতিশীল করার স্বার্থে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মনে করা হচ্ছে নতুন বাজেটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কর বৃদ্ধি করা হবে এবং সাধারণ ব্যয় কমানো হবে। সুনাক সরকারের অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট এরইমধ্যে আশ্বাস দিয়েছেন দুর্বল ও ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে। যদিও বিশ্বের অন্যতম খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ মেগান গ্রেইন বলেছেন: ব্রিটেনের অর্থনৈতিক পরিস্থতি ভয়াবহ রকমের খারাপ। যুক্তরাজ্যকে অনেক দুর্গম পথ তপাড়ি দিতে হবে বলেও এই বিশেষজ্ঞ মন্তব্য করেন। ব্রিটিশরা বর্তমানে জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এমনকি এই লড়াইয়ে তারা দৈনন্দিন খাদ্যপন্য কেনাও কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। সুনাককে তাই বড় রকমের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news