দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১৪ রানের ব্যবধানে হেরে সিরিজ হারল বাংলাদেশ। বুধবার রাতে চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান তোলে। জবাবে বাংলাদেশ থেমে যায় ১৩৫ রানে, হার ১৪ রানের। এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২–০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় সফরকারীরা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের আগুন ঝরা পারফরম্যান্স
বল হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আকিল হোসেন ছিলেন দুর্দান্ত—৪ ওভারে ২২ রানে ৩ উইকেট। রোমারিও শেফার্ডও ছিলেন সমান কার্যকর, তিনি ৪ ওভারে ২৯ রানে নিয়েছেন আরও ৩ উইকেট। জেসন হোল্ডারও ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট।
জাকের-শামীমের বিদায়ে চাপে বাংলাদেশ
১৮তম ওভারের শেষ বলে জাকের আলি (১৭) এবং ১৯তম ওভারের প্রথম বলে শামীম পাটোয়ারী (১) আউট হয়ে গেলে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। শেষ ১১ বলে প্রয়োজন ছিল ২৬ রান, ক্রিজে ছিলেন তানজিম হাসান সাকিব ও রিশাদ হোসেন। কিন্তু আর সম্ভব হয়নি অলৌকিক কিছু।
একা লড়লেন তানজিদ হাসান
পুরো ইনিংস জুড়ে এক প্রান্ত আগলে খেলেছেন তানজিদ হাসান তামিম। তবে ১৮তম ওভারে রোমারিও শেফার্ডের বলে ব্র্যান্ডন কিংয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৪৮ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ৬১ রান।
এর আগে ৩৯ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন তানজিদ, এটি তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি। তার ব্যাটে ভর করে ১৫ ওভারে শতরান পেরোয় বাংলাদেশ।
হৃদয়ের বিদায়, চাপ বাড়ায় টাইগারদের
দলীয় ৮৫ রানে ১৪ বলে ১ চারে ১২ রান করে রোমারিও শেফার্ডের বলে জেডেন সিলসের হাতে ধরা পড়েন তাওহিদ হৃদয়। এরপরই ব্যাটে নামেন জাকের আলি, তবে জুটি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
শুরুটা ভালো হলেও শেষটা হতাশাজনক
পাওয়ার প্লেতে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ৩৭ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। সাইফ হাসান ১১ বলে ৫ রান করে হোল্ডারের বলে আউট হলেও, লিটন দাস (২৩) ও তানজিদ মিলে গড়েন ভালো সূচনা। কিন্তু পরের অংশে ব্যাটারদের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় হার এড়ানো যায়নি।
বাংলাদেশের সামনে ১৫০ রানের টার্গেট
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯ উইকেটে ১৪৯ রান তোলে। ব্যাট হাতে শেই হোপ সর্বোচ্চ ৫৫, অ্যালিক অ্যাথানেজ ৫২, রোস্টন চেজ ১৭ ও রোমারিও শেফার্ড ১৩ রান করেন।
বাংলাদেশের হয়ে মোস্তাফিজুর রহমান ছিলেন সবচেয়ে সফল বোলার—৪ ওভারে ২১ রানে ৩ উইকেট। রিশাদ হোসেন ২ ও নাসুম আহমেদও নেন ২টি করে উইকেট।
মোস্তাফিজের জোড়া আঘাত
শেষ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করেন মোস্তাফিজ। মাত্র ৫ রান দিয়ে তুলে নেন ২ উইকেট। প্রথমে রোমারিও শেফার্ড (১৩) ক্যাচ তুলে দেন জাকের আলির হাতে, পরের বলেই খারি পিয়েরে বোল্ড। শেষ বলে রান নিতে গিয়ে রান আউট হন আকিল হোসেন।
রিশাদ-নাসুমের দারুণ স্পেল
রিশাদ হোসেন ফিরিয়েছেন পাওয়েল (৩) ও হোল্ডারকে (৪)। তার আগেই নাসুম আহমেদ এনে দেন দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট—অ্যালিক অ্যাথানেজ (৫২) ও রাদারফোর্ডকে (০)। তাদের আঘাতেই ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ, যদিও শেষ পর্যন্ত ব্যাটাররা পারেননি জয়ের মুখ দেখতে।
ম্যাচের শুরুতেই তাসকিনের আঘাত
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মাত্র ১ রানে ব্র্যান্ডন কিংকে আউট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলেছিলেন তাসকিন আহমেদ। কিন্তু এরপর হোপ ও অ্যাথানেজের ৯৩ রানের জুটিই গড়ে দেয় দলের জয়ভিত্তি।
টস ও একাদশ
ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক শেই হোপ টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন। বাংলাদেশ একাদশে এক পরিবর্তন আনে—নুরুল হাসানের জায়গায় খেলেন জাকের আলি অনিক।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ অপরিবর্তিত দল নিয়েই নামে। হোপ বলেন, “উইকেট শুকনো, আগের ম্যাচের মতো এবারও আগে ব্যাট করাই সঠিক সিদ্ধান্ত।”
লিটন দাস বলেন, “আমাদের ব্যাটারদের এবার দায়িত্ব নিতে হবে, ১৮০ রানই ভালো স্কোর হতে পারে।”
