পুতিনের ভাষণে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, মোদির মুখে হাসি
জি-২০ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন আসেননি। কিন্তু দিল্লির ওই সম্মেলন দারুণ সফল বলে বিবৃতি দিয়েছে মস্কো। প্রশংসা করেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকারও। এবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কথায় উঠে এল মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের কথা। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ওই প্রকল্পকে শিল্পে স্বাবলম্বী হওয়ার দিশা বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
রাশিয়ার বন্দর শহর ভ্লাদিভস্টকে সে দেশের ইস্টান ইকনোমিক ফোরামের সম্মেলনে গাড়ি শিল্প নিয়ে আলোচনায় পুতিন বলেন, ‘গাড়ি তৈরিতে আমরা এখনও বিদেশের উপর নির্ভরশীল। আমার মনে হয় বিদেশ থেকে গাড়ি আমদানি না করে ভারতের থেকে শিক্ষা নিতে পারি।’ বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ একটি ভাল ভাবনা। বিদেশিরা আমাদের দেশে এসে পণ্য তৈরি করুক। তাহলে আর রফতানি ব্যয়ের বোঝা বইতে হয় না।’
রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এখন অত্যন্ত মধুর। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পরও ভারত আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়ার আপত্তি অগ্রাহ্য করে রাশিয়ার থেকে অশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়া যখন গোটা ইউরোপের চাপের মুখে, তখন ভারত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের কথা বলেছে। ইউক্রেনের সঙ্গেও সু-সম্পর্ক বজায় রেখেছে মোদি সরকার।
নরেন্দ্র মোদির এই বিদেশ নীতির প্রশংসা করেছে বিরোধী দল কংগ্রেসও। জি-২০ সম্মেলন চলাকালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং রাহুল গান্ধী রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে মোদি সরকারের প্রশংসা করেছেন।
তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পুতিনের একেবারে মোদির প্রকল্প উল্লেখ করে প্রশংসার পিছনে প্রতিদানের সমীকরণ কাজ করে থাকতে পারে। জি-২০ সম্মেলনের দিল্লি ঘোষণাপত্র নিয়ে তৈরি জটিলতা মোদি সরকার দক্ষতার সঙ্গে মিটিয়েছে। অধিকাংশ দেশ দিল্লি ঘোষণাপত্রে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার, বিশেষ করে পুতিনের নিন্দা করে প্রস্তাব গ্রহণের পক্ষে ছিল। তাতে ঘোর আপত্তি ছিল রাশিয়া ও চীনের।
কিন্তু ভারতের বক্তব্য ছিল, জি-২০ একটি অর্থনৈতিক জোট। সামরিক জোট নয়। তাই যুদ্ধের প্রসঙ্গ সরাসরি এই জোটের সম্মেলনে উল্লেখ সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না। তবে যুদ্ধের কারণে অর্থনীতির ক্ষতির দিকটি প্রস্তাবে থাকতে পারে। শেষ পর্যন্ত আয়োজক দেশ ভারতের কথায় সম্মত হয় আমেরিকা-সহ সব দেশ। ঠিক হয়, প্রস্তাবে রাশিয়ার নাম উল্লেখ করা হবে না। এই সিদ্ধান্তে রাশিয়া অত্যন্ত খুশি। সম্মেলনে যোগ দেওয়া রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিল্লি ছাড়ার আগে সে কথা ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে জানিয়ে যান।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা
এনবিএস/ওডে/সি


