মানবাধিকারের রক্ষকদের মৃত্যুমান নীরবতা বিশ্ববাসী ভুলে যাবে না: ইরান

ইরান বলেছে, বসিনয়ার মুসলমানদের ওপর বর্বর সার্ব বাহিনীর সংঘবদ্ধ গণহত্যার ব্যাপারে মানবাধিকারের রক্ষকদের মৃত্যুমান নীরবতার কথা বিশ্ববাসীর স্মৃতি থেকে কখনও মুছে যাবে না। বসনিয়ার সেব্রেনিৎসা গণহত্যার ২৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার রাতে নিজের অফিসিয়াল টুইটার পেজে দেয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন ইরান সরকারের মুখপাত্র আলী বাহাদুরি জাহরোমি।

১৯৯৫ সালের ১১ই জুলাই সার্বীয় বাহিনী বসনিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সেব্রেনিৎসা এলাকা দখল করে।  জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ ঘোষিত হওয়া সত্ত্বেও এবং জাতিসংঘের ডাচ শান্তিরক্ষীদের উপস্থিতিতেই সেব্রেনিৎসায় চালানো হয় নারকীয় গণহত্যা ও জাতিগত শুদ্ধি অভিযান। 

সেব্রেনিৎসা দখলের প্রথমদিন থেকেই সার্বীয় বাহিনী স্থানীয় বসনীয় জনগোষ্ঠীর সকল পুরুষকে আলাদা করে নেয়। পরে তাদেরকে গণহারে হত্যা করে।  ১১ই জুলাই থেকে ২২ই জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন সেব্রেনিৎসার কোথাও না কোথাও এই গণহারে হত্যার ঘটনা ঘটেতে থাকে।  হত্যার শিকার ব্যক্তিদেরকে মৃত্যুর আগে নিজেদের কবর খনন করতে সার্বীয় বাহিনী বাধ্য করে।  জুলাই মাসের ২২ তারিখের শেষ নাগাদ এরকম আট হাজারেরও বেশি বসনীয় পুরুষ ও বালক গণহত্যার শিকার হয়। এই গণহত্যা চলার সময় জাতিসংঘ নীরবতা পালন করলেও পরে একে ‘জাতিগত শুদ্ধি অভিযান’ বলে স্বীকৃতি দেয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের মাটিতে এটি ছিল সবচেয়ে বড় গণহত্যা। এখনও ওই গণহত্যার শিকার বহু হতভাগ্য মুসলমানের লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ সম্পর্কে জাহরোমির টুইটার বার্তায় বলা হয়, ২৭ বছর আগে এই দিনগুলোতে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ঘোষিত নিরাপদ অঞ্চলে আট হাজারের বেশি মুসলমানকে নৃশংস উপায়ে হত্যা করা হয়। ওই গণহত্যার ব্যাপারে মানবাধিকারের রক্ষক হিসেবে পরিচিত আন্তর্জাতিক সমাজের মৃত্যুরূপী নীরবতার কথা বিশ্ববাসীর স্মৃতি থেকে কখনও মুছে যাবে না।ইরান সরকারের মুখপাত্র তার টুইটার বার্তায় নতুন করে আবিষ্কৃত ৫০ ব্যক্তির দেহাবশেষের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।

গতকাল (সোমবার) সেব্রেনিৎসা গণহত্যার ২৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে সেব্রেনিৎসার পোটোচারি কবরস্থানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে ওই গণহত্যার শিকার আরো ৫০ ব্যক্তির দেহাবশেষ দাফন করা হয়। এর ফলে এই কবরস্থানে দাফন করা হতভাগ্য মানুষের সংখ্যা ৬,৭২১ জনে উন্নীত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বসিনিয়ার বিভিন্ন স্থানের গণকবর থেকে এসব দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে এসব দেহাবশেষের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।গতকাল যাদের দাফন করা হয় তাদের মধ্যে নিহত হওয়ার সময় সবচেয়ে কমবয়সি ব্যক্তির বয়স ছিল ১৬ বছর এবং সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তির বয়স ছিল ৫৯ বছর।খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news