১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভাঙাকে ঘিরে উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। ঠিক ৩৩ বছর পর একই দিনে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে “বাবরি মসজিদ” নামে নতুন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে রাজনীতিতে ঝড় তুলে দিলেন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত নেতা হুমায়ুন কবীর।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রেজিনগরে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ২৫ বিঘা জমিতে এই ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠান হয়েছে। যেকোনো অশান্তি এড়াতে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে ১৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। শুক্রবার দুপুর থেকেই মুর্শিদাবাদজুড়ে শুরু হয়েছে কড়া টহল।
হুমায়ুন কবীর দাবি করেছেন, অনুষ্ঠানে প্রায় ৩ লাখ মানুষ জমায়েত হয়েছে! বহরমপুর থেকে রেজিনগর পর্যন্ত রাস্তায় তীব্র যানজট। তিনি বলেন, “মাত্র তিন কাঠা জায়গা নিয়ে এত বিরোধিতা হয়েছে, তবুও আমরা ২৫ বিঘা জমিতে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করছি। এখানে হাসপাতাল হবে, বিশ্ববিদ্যালয় হবে, পার্ক হবে। যত কোটি টাকা লাগে, মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর-দক্ষিণ দিনাজপুর, ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, মেদিনীপুরের মানুষ মিলে দেবেন।”
১২ নম্বর জাতীয় সড়ক যাতে বন্ধ না হয়, সকাল থেকে পুলিশের কড়া নজরদারি। দেশ-বিদেশ থেকে এসেছেন ৪০ হাজার অতিথি। সাতটা ক্যাটারিং কোম্পানি মিলে বানাচ্ছে শাহী বিরিয়ানি, সাধারণ মানুষের জন্য প্যাকেট খাবার। শুধু খাবারেই খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ লাখ টাকা!
১৫০ ফুট লম্বা, ৮০ ফুট চওড়া মঞ্চে ৪০০ জন বসতে পারবেন। মঞ্চ বানাতেই খরচ ৩০ লাখ। বক্তব্য শোনানোর জন্য লাগানো হয়েছে ৬০০০ মাইক আর ১০০ জেনারেটর। কাজ করছেন ২-৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। সৌদি আরব থেকেও দুজন অতিথি এসেছেন। নিরাপত্তায় মোতায়েন ৩০০০ পুলিশ, হুমায়ুন কবীরের উপর সিআইডি-র বিশেষ নজর।
এদিকে অযোধ্যায় রাম মন্দির হয়ে গেলেও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দেওয়া ৫ একর জমিতে নতুন মসজিদের কাজ এখনও শুরু হয়নি। ট্রাস্ট বলছে, নতুন মসজিদের নাম হবে ‘মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ’, নকশা ১৪০০ বর্গমিটারের। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অযোধ্যা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির কাছে জমা দেবে। মসজিদের সঙ্গে হাসপাতাল ও কমিউনিটি কিচেনও হবে। কিন্তু সমাজবাদী পার্টি অভিযোগ করছে, সরকার বৈষম্য করছে আর ট্রাস্টও ইচ্ছাকৃত ধীরগতিতে কাজ করছে।
