আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হলো ইউক্রেন থেকে আলাদা হওয়া ৪ অঞ্চল

গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেন থেকে আলাদা হওয়া দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে রুশ ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আজ (শুক্রবার) মস্কোর ঐতিহাসিক রেড স্কয়্যারে এক উৎসবমুখর পরিবেশে ওই চার অঞ্চলের নেতৃবৃন্দ রাশিয়ায় যোগদান সম্পর্কিত নথিপত্রে স্বাক্ষর করেন।

এ সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়ার জনগণ তাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ থেকে তারা সবাই রাশিয়ার নাগরিক। আমরা তাদের সবাইকে রাশিয়ান ফেডারেশনের পক্ষ থেকে উষ্ণ অভিনন্দন জানাচ্ছি।’

পুতিন বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে রুশ ফেডারেশনের নতুন এই চার অংশকে ফেডারেল অ্যাসেম্বলি সমর্থন জানাবে। কারণ, এটা লাখ লাখ মানুষের আকাঙ্ক্ষা ছিল।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত কর্মকর্তারা করতালি ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে পুতিনের এই ঘোষণাকে সমর্থন জানান। 

পশ্চিমা দেশগুলোকে ‘শয়তান’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, দেশগুলো ঐতিহ্যগত ও ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকে দূরে সরে গেছে। তারা নৈতিকতার রীতিনীতি ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। এরপর ইউক্রেনে যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত রুশ সেনাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের আহ্বান জানান পুতিন। এ সময় তিনি বলেন, নিহত এই সেনারা রাশিয়ার নায়ক। স্বদেশের জন্য তাঁরা নিজেদের জীবন দিয়েছেন।

এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে স্বাক্ষরিক আলাদা দুই ডিক্রিতে পুতিন বলেন, ‘আমি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসনকে স্বীকৃতি দিচ্ছি।"

রাশিয়ার রাষ্ট্রপরিচালিত গণমাধ্যম আরটি জানিয়েছে, স্বাক্ষরের দিন থেকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে তাদের স্বীকৃতি কার্যকর হবে। খবরে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদে উল্লিখিত বিধির সঙ্গে সংগতি রেখে দুই অঞ্চলকে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত গণভোটে ওই চার অঞ্চলের অধিকাংশ বাসিন্দা রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছেন। পাঁচ দিনের গণভোটের পর ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে, লুহানস্কের ৯৮ দশমিক ৪ শতাংশ ভোটার রাশিয়ায় যুক্ত হওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। জাপোরিঝঝিয়ায় ভোট দিয়েছেন ৯৩ দশমিক ১ শতাংশ ভোটার। খেরসনে ভোট গ্রহণ কমিটির প্রধান বলেছেন, রাশিয়ায় যুক্ত হওয়ার পক্ষে ভোট পড়েছে প্রায় ৮৭ শতাংশ।

এদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এক প্রতিক্রিয়ায় প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চল নিজেদের সঙ্গে একীভূত করার এই তৎপরতা জাতিসংঘের সনদ বিরোধী এবং এর কোনো আইনি মূল্য নেই। গুতেরেস রাশিয়ার কর্মকাণ্ডকে ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধকে বিপজ্জনকভাবে আরও ‍উস্কে দেবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।  

অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আমেরিকা কখনোই ইউক্রেনের অঞ্চলকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেবে না। ইউক্রেনের চার অঞ্চলকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘোষণাকে সামনে রেখে বাইডেন এসব কথা বলেছেন।
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news